16 আগস্ট সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যজুড়ে ‘খেলা হবে’দিবস পাল করছে তৃণমূল কংগ্রেসের। বাংলা সহ মোট 15 টি রাজ্যে পালন করা হচ্ছে দিনটি। এই দিন 1 লক্ষ ফুটবল রাজ্যের একাধিক ক্লাব, সংগঠন, ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে তৈরি রাজ্য সরকারের ‘জয়ী’বল বিতরণ করা হবে। রাজ্যের নবীন প্রজন্ম যাতে খেলাধুলায় এগিয়ে যেতে পারে সেই জন্য ‘খেলা হবে’ দিবস পালন করবে রাজ্য সরকার। স্বাধীনতার পর দিন যাতে মানুষের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন থাকে, স্বাধীনতার ভাষা, কণ্ঠরোধ না হয় তার জন্য খেলাধুলার মাধ্যমে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ রাখা হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বিধানসভা ভোটের আগে এই খেলা হবে স্লোগানকে মূল হাতিয়ার করেই প্রচারের ঝড় তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বরা। তাই তৃতীয় বার বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে 16 ই আগস্ট খেলা হবে দিবস পালন করার কথা ঘোষণা করা হয়।এবার রাজ্যজুড়ে ‘খেলা হবে’ দিবস পালন করে ঐক্য-সংহতির বন্ধনে রাজ্যকে বাঁধতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অতীতে 1980 সালে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে ইডেন গার্ডেন্সে। কলকাতা ফুটবল লিগের ডার্বিতে ট্রাজিক ঘটনা আজও ক্ষত হয়ে রয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের মনে। দুই দলের সমর্থকদের মারামারি ও পদপিষ্ট হয়ে 16 জনের প্রাণহানি হয়।তারপর থেকে ওইদিনটি ‘ফুটবল লাভার্স ডে’ হিসাবে পালন করা হয় কলকাতা ময়দানে। সেই দিনের স্মৃতি এখনও টাটকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেকথা আজ তিনি জানান সাংবাদিক বৈঠকে। সেই কারণেই 16 আগস্ট দিনটিতেই ‘খেলা হবে’ দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এই কর্মসূচিকে বাংলার বাইরে ছড়িয়ে দিতেও মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবার উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরা-সহ একাধিক রাজ্যে এই দিনটি পালন করছে তৃণমূল। তবে নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাতে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে গুজরাতের গোধরায় ‘খেলা হবে’ দিবস উপলক্ষ্যে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেছিল ঘাসফুল শিবির। কিন্তু মাঠে, বল গড়ানোর 24 ঘণ্টা আগে গোধরার সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, কোভিড পরিস্থিতির কারণে সেই অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।
খেলা হবে দিবসের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব বাম-বিজেপি। এই বিষয়ে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, ‘ বিজেপির চাপে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে অনুমতি তুলে নিয়েছে, এরপরও ওরা মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলবে, গণতন্ত্রের কথা বলবে’। বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হার দাবি, ‘খেলার নামে অশান্তি পাকাতে চাইছে তৃণমূল, ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরির চেষ্টা করছে, কোনও স্কুল এটা পারমিশন দিতে পারে না’ । ‘খেলা হবে’ দিবসের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বামেরাও। সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘ তৃণমূল রাজনীতিকে সরকারি কাজে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে’। প্রসঙ্গত, রবিবার ‘খেলা হবে’ দিবসের আগে কালিন্দিতে বল পায়ে নামেন মন্ত্রী তথা বিধাননগরের তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসু।