জয়পুরের মিনা আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে স্থানীয় হিন্দু সংগঠনের সংঘর্ষ

दैनिक समाचार

লেখিকা সাবাতিনি চ্যাটার্জী

জয়পুরের অষ্টাদশ শতাব্দীর একটি দুর্গ কে ঘিরে গত দুই মাস ধরে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, স্থানীয় মিনা সম্প্রদায় ভুক্ত আদিবাসী মানুষ এবং স্থানীয় হিন্দু সংগঠন গুলির মধ্যে জাফরান (saffron) রঙের পতাকা উত্তোলন নিয়ে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয় পুলিশ সম্ভাব্য বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিষয়টিকে সামলানোর চেষ্টা করছেন। জয়পুরের আমগর  দুর্গের মিনা আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত  নেতাদের অভিযোগ যে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় ভুক্ত মানুষেরা তাদের আদিবাসী সংস্কৃতি উপর অবৈধ হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ,হিন্দু সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই মিনা আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের উপর হামলা চালিয়েছেন এবং তাদের ঐতিহ্যের প্রতীক জাফরান রং এর পতাকা আমগরে দুর্গ থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এরই সাথে হিন্দু সংগঠন গুলি থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আগস্ট মাসের ১ তারিখে তাদের অনুগামীদের আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে সেই দিন সবার উপস্থিতিতে নতুন পতাকা দুর্গে উত্তোলন করতে পারে।

এই প্রসঙ্গে মিনা আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতারা  তাদের আদিবাসী সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য কে কালিমালিপ্ত করার জন্য স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় ভুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। মূলত এই  দূর্গটিতে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই চরম বিশৃঙ্খলা এবং ভাঙচুর লক্ষ করা গেছে। স্থানীয়  আদর্শনগর এর এসিপি  নিল কামাল সাহেব বলেছেন যে, এই ইস্যুতে জুন মাসে একটি এফআইআর পাওয়ার পর পুলিশ  কিছু মুসলিম সম্প্রদায় ভুক্ত কিশোরদের আটক করেছেন।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে সরকার বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পেরে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া চেষ্টা করছে।

এই দুর্গের ইতিহাস প্রসঙ্গে স্থানীয় গঙ্গারামপুর শহর এর এমএলএ  রামকেশ  মিনা জানিয়েছেন, “আমগর দুর্গটি কয়েকশো বছর আগে মিনারা তৈরি করেছিলেন। দুর্গের অভ্যন্তরে মিনা আদিবাসী গোষ্ঠীর বিভিন্ন দেবদেবীরা পূজিত হয়ে থাকেন যাদের মধ্যে আম্বা দেবী ,ভেরুজি,শিবজি উল্লেখযোগ্য”। “দুর্ভাগ্যবশত কিছুদিন আগে এদের মধ্যে কিছু দেবদেবীর মূর্তি কে চুরি করা হয়েছে এবং ভাঙচুর করা হয়েছে। এবং পরে জানতে পারা যায় কিছু লোক দুর্গের উপরে একটি লম্বা স্যাফরন  রং এর পতাকা স্থাপন করেছিলেন”। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বিধায়ক রামকেশ মিনা রাজস্থান আদিবাসী মিনা সেবা সংঘের সভাপতি।

এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা দরকার যে মিনাকে রাজস্থানের তপশিলি উপজাতি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। আদিভাসি সাম্প্রদায়ের মানুসদের কাছে তাদের দেব দেবি এবং সংস্কৃতি আত্তন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মিনা সম্প্রদায় ভুক্ত আদিবাসীরা তাদের ধর্মীয় ভাবাবেগে কোনভাবেই ছোট করতে চায় না। কংগ্রেস সমর্থনকারী বিধায়ক দাবি করেন যে, কিছু দেবতার নাম কাল ক্রমে পরিবর্তিত হয়েছে সেগুলো যথাক্রমে “আম্বা মাতার নাম পরিবর্তিত হয়ে আম্বিকা ভবানী করা হয়েছে”।প্রসঙ্গত স্থানীয় বিধায়ক আরো জোর দিয়ে বলেছেন যে “প্রতিমা ভাংচুরের বিষয়ে কোনো হিন্দু মুসলিম দ্বন্দ্ব নেই”। বরং  তার মতেহিন্দু সংগঠনগুলি ভাংচুরের বিষয় চরম ভাবে দোষী কারণ তারা দুর্গে প্রবেশ করা এবং দখল করার জন্য সম্পূর্ণ ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *