তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠীর দখলে আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের জীবন

दैनिक समाचार

       সম্প্রতি পাওয়া খবর অনুসারে আফগানিস্তানের আরো একটি প্রদেশে নিজেদের ঝান্ডা অক্ষত করতে সক্ষম হয়েছে তালিবানের জঙ্গীরা। মনে করা হচ্ছে, রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র 50 কিলোমিটার দক্ষিনে রয়েছে তাদের বর্তমান ঘাঁটি।এবার কাবুল দখলের পথে তালিবান। গজনি, কান্দাহার দখলের পর কাবুলের প্রায় 40 কিলোমিটারের মধ্য়ে চলে এসেছে তালিবান বাহিনী। ষাঁড়াশি চাপ তৈরি করতে হাজার হাজার তালিবান এগিয়ে আসছে দখলের জন্য। ইতিমধ্যেই তিনটি এলাকা দখলের পথে এগিয়েছে তাঁরা। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাত এবং রাজধানী কাবুল দখল করতে অগ্রসর হয়েছে তালিবানিরা।

                 সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তালিবানদের নতুন প্রদেশ বিষয়টি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তালিবানদের দখলদারির আগ্রাসন নীতি ক্রমে আরো শক্তি সঞ্চয় করে অগ্রসর হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই আফগান সরকারের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুসারে ইতিমধ্যেই দেশের 12 টি প্রদেশ নিজের দখলে এনেছে তালিবানরা। মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছাড়ার পর থেকেই আরো বেশি করে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী। “দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল” এর রিপোর্ট বলছে , জঙ্গিগোষ্ঠী রা মুখে যতই বলুক তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই তবে দেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে এই তালিবানরা। যে সমস্ত আফগান সেনা জওয়ান আত্মসমর্পণ করেছিল তাদেরকেও হত্যা করেছে তারা। আফগানিস্তানের নিরস্ত্র জনতার উপর চলছে হামলা এবং অমানবিক অত্যাচার। সম্প্রতি সেই নমুনা দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রদেশে। তবে মনে করা হচ্ছে তালিবানি অত্যাচার আরো বর্বোরোচিত হয়ে উঠেছে এবং যার সাক্ষী থাকছে আফগানিস্থানের সাধারণ জনগণ। রিপোর্টে পাওয়া তথ্য অনুসারে, জঙ্গিদের সঙ্গে আফগান যুবতীদের জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে এবং শুধু এতেই তাদের আত্মতুষ্টি হচ্ছে তা নয় বরং বিয়ের নামে চরম যৌন নির্যাতন শুরু করছে জঙ্গিরা।

       যদিও আপেক্ষিকভাবে আফগানিস্তানের বহু প্রদেশ ক্ষমতা দখলের পর দেশবাসীর উদ্দেশ্যে শান্তির বার্তা দেয় তালিবানি জঙ্গীরা। তারা জানায় তালিবানিদের নিয়ে দেশবাসী তথা সরকারি আমলা ও সেনাবাহিনীর ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। কিন্তু “দা ওয়ার্ল্ড স্ট্রীট” জার্নাল এর খবর অনুসারে ক্ষমতায় আসার পর তালিবানি জঙ্গীরা নিজেদের কথা রাখেননি।

       বর্তমানে তালিবানদের এই দ্বিচারিতা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে আফগানিস্থানের আমেরিকা দূতাবাস। সরকারি টুইটার হ্যান্ডেল মারফত তারা জানিয়েছে যে আত্মসমর্পণকারী আফগান সেনা জওয়ান দের হত্যা করা হচ্ছে যা যুদ্ধপরাধের সমান। এবং এটা মেনে নেওয়া যায় না। তালিবানি মুখপাত্র জানিয়েছিল যে আফগানিস্তানের অন্যতম বড় শহর কান্দাহার এখন তাদের দখলে। রাজ্যপালের ভবন ছাড়াও সব সরকারি ইমারত এখন তাদের দখলে। মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের সবশেষ মূল্যায়নে বলছে, তালেবান আগামী 30  দিনের মধ্যে কাবুলের দিকে এগুনোর চেষ্টা করতে পারে। কাবুল প্রদেশের কাছাকাছি এলাকায় তালিবানের অবস্থানগুলোতে মার্কিন বাহিনী সম্প্রতি বিমান হামলাও চালিয়েছে।

       আফগানিস্তানের আজ এই দুর্দিনে যখন তালিবানের জঙ্গিরা ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে “সেনা পাঠালে ভাল ফল হবে না” এই পরিস্থিতিতে আফগান নাগরিকদের আশ্রয় সিদ্ধান্ত নিল নয়াদিল্লি।স্রেফ ভারতই নয়, আফগান নাগরিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে আমেরিকা, কানাডার মতো দেশও। ভারতের মতোই সাহায্যকারী আফগানদের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাইডেন প্রশাসন। মানবাধিকার কর্মী, নেত্রী স্থানীয় মহিলা, সাংবাদিক-সহ কুড়ি হাজার মানুষকে পুর্নবাসন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কানাডাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *