কেন্দ্রীয় খনি মন্ত্রক ২০১৬-র খনিজ (আনবিক ও হাইড্রোকার্বন শক্তি উৎপাদনকারী খনিজ বাদে) আইন সংশোধন করতে খনিজ (আনবিক ও হাইড্রোকার্বন শক্তি উৎপাদনকারী খনিজ বাদে) ছাড় (চতুর্থ সংশোধন) বিধি ২০২১ জনসমক্ষে প্রকাশ করেছে।
২০২১-এর খনি ও খনিজ (উন্নয়ন ও সংশোধন) আইনের মাধ্যমে ১৯৫৭ সালের সংশ্লিষ্ট আইনে একাধিক সংশোধন করা হয়েছে। ২০২১-এর সংশোধিত আইনটি গত ২৮ মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে। খনি ও খনিজ (উন্নয়ন ও সংশোধন) আইনে সংশোধনের উদ্দেশ্য ছিল খনি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বাড়ানো, রাজ্যগুলির রাজস্ব বৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে খনি থেকে উত্তোলন শুরু করা, খনিজ অনুসন্ধানে গতি বাড়ানো সহ খনিজ সম্পদের নিলাম প্রভৃতি। খনি ও খনিজ উন্নয়ন আইনে সংশোধনগুলি কার্যকর করতে ২০১৬-র খনিজ (আনবিক ও হাইড্রোকার্বন শক্তি উৎপাদনকারী খনিজ বাদে) ছাড় আইনে সংশোধন করা হয়েছে।
রাজ্য সরকার, শিল্প সংস্থা, খনি শ্রমিক, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষ ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ আলোচনার পর সংশোধিত আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়। সংশোধিত এই আইনের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দিক নিম্নরূপ :-
• নতুন এই আইনে লিজ দেওয়া ক্যাপটিভ খনিগুলি থেকে উৎপাদিত খনিজের ৫০ শতাংশ বিক্রির সংস্থান রাখা হয়েছে। এর ফলে সরকার আরও বেশি পরিমাণে ক্যাপটিভ খনিগুলি থেকে খনিজ সম্পদ বাজারে ছাড়তে পারবে। খনিজ সম্পদের নির্দিষ্ট পরিমাণ বিক্রয়ে যে ভাতা দেওয়া হবে, তা ক্যাপটিভ খনিগুলি থেকে উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, অতিরিক্ত প্রিমিয়াম, রয়্যালটি এবং অন্যান্য বিধিবদ্ধ মাশুল মেটানোর প্রেক্ষিতে খনিজ সম্পদের বিক্রির পরিমাণ যেমন বাড়বে, তেমনই রাজ্য সরকারগুলির রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।
• সংশোধিত আইনে অতিরিক্ত খনিজ সম্পদের মজুত বিপণনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সীমায় নামিয়ে আনার সংস্থান রয়েছে। এর ফলে, অতিরিক্ত খনিজ সম্পদ মজুত থাকার বোঝা হ্রাস পাবে। এমনকি খনির লিজ গ্রহিতারও সহজে সম্পদের বিপণন করতে পারবেন।
• খনি লিজ দেওয়ার ন্যূনতম এলাকার পরিমাণ সংশোধন করে ৫ হেক্টর থেকে ৪ হেক্টর করা হয়েছে।
• সমস্ত ক্ষেত্রে লিজ নেওয়া খনির কোনো একটি অংশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সারেন্ডার বা ফেরৎ দেওয়ার সংস্থান আইনে রাখা হয়েছে। বর্তমানে যেসমস্ত ক্ষেত্রে খননের জন্য অরণ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে ছাড়পত্র মেলেনি, কেবল সেই ক্ষেত্রে আংশিক সারেন্ডার করা যায়।
• সব ধরণের খনির ক্ষেত্রে কম্পোজিট লাইসেন্স বা খনি সংক্রান্ত লিজ হস্তান্তরের ছাড়পত্র সংশোধিত আইনে রয়েছে।
• বিলম্বিত মাশুল মেটানোর ক্ষেত্রে সুদের হার সংশোধন করে বর্তমান ২৪ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ করা হয়েছে।
• ২০১৬-র খনিজ (আনবিক ও হাইড্রোকার্বন শক্তি উৎপাদনকারী খনিজ বাদে) ছাড় আইনে সরকারি সংস্থা ও তাদের মাশুল মেটানোর বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
• সংশোধিত আইনে জরিমানা আরোপের শর্ত শিথিল করা হয়েছে। আগে বিধিভঙ্গকারীদের ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়ই হতো। কিন্তু সংশোধিত আইনে কেবলমাত্র গুরুতর বিধিভঙ্গের ক্ষেত্রে কারাদণ্ড বা জরিমানা আরোপের সংস্থান রয়েছে। ছোটোখাটো বিধিভঙ্গের ক্ষেত্রে জরিমানা হ্রাস করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কেবল কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানার সংস্থান রাখা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় খনি মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে (www.mines.gov.in) সংশোধিত আইনটি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে।