ব্যর্থ হল ইসরোর জিএসএলভি-এফ10 মিশন (ISRO GSLV-F10) : সম্ভাব্য কারন এবং ব্যাখ্যা

दैनिक समाचार विज्ञान एवं प्रौद्योगिकी

লেখিকা  সাবাতিনি চ্যাটার্জী

                12 ই আগস্ট 2021, ভোর 5 টা 43 মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় সতীশ  ধবন স্পেস সেন্টার থেকে জিএসএলভি-এফ 10 রকেটে চড়ে মহাকাশে রওনা দেয় উপগ্রহ আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট-03 (ইওএস-03) উপগ্রহ।উৎক্ষেপণের মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই মাঝ আকাশে ভেঙে পড়ে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র নতুন প্রয়াস  জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল-এফ10 (জিএসএলভি-এফ10) রকেট।

                 ইসরো থেকে টুইট বার্তায় জানানো হয়েছে, যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে এই দুর্ঘটনা হয়েছে।প্রসঙ্গত,ইসরো সূত্র মারফত জানা গেছে,  লিফ্ট-অফ  বা উৎক্ষেপণের 4 মিনিট 50 সেকেন্ড পর চালু হওয়ার কথা ছিল তৃতীয় ক্রায়োজেনিক স্টেজের। কিন্তু সঠিক সময়ে সেটি ঠিকমতো কাজ করেনি অর্থাৎ ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন চালু হয়নি যার কারণে, রকেট দ্রুততার গতির হারাতে শুরু করে এবং উচ্চতা ও নিম্নমুখী হতে শুরু করে । যার ফলস্বরূপ একটা সময় রকেট তার পূর্বনির্ধারিত পথ থেকে অনেকটাই সরে আসে এবং শেষে সম্পূর্ণ কর্মকাণ্ডটি চরমভাবে ব্যর্থ হয়। প্রসঙ্গত ক্রায়োজেনিক স্টেজ হল যেকোনো মহাকাশ উৎক্ষেপনকারী যানের যাত্রাপথে একেবারে শেষ পর্যায়ে। এই পর্যায়ে মূলত নিম্ন তাপমাত্রায় তরল জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে মহাকাশে ভারী বস্তু কে তাদের সঠিক কক্ষপথে প্রতিস্থাপন করা হয়ে থাকে।যে কারণে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন হল অত্যন্ত শক্তিশালী একটি ইঞ্জিন। ভারত বাদে বিশ্বের আর ৫টি দেশের নিজস্ব ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন আছে যথা- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স (ইউরোপীয় এজেন্সি), রাশিয়া, চিন ও জাপান।ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনে তরল অক্সিজেন এবং তরল হাইড্রোজেন কে মূলত জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তরল অক্সিজেন এবং তরল হাইড্রোজেন উভয় জ্বালানি তাদের নিজ নিজ  ট্যাঙ্কে সংরক্ষিত থাকে এবং সেখান থেকে পৃথক বুস্টারপাম্পের মাধ্যমে টার্বো পাম্প এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে শক্তি ব্যবহার করে পাঠানো হয় দুই জ্বালানিকে।  যার কারণে দহন চেম্বারের  ভেতরে  প্রোপেলেন্টের উচ্চ প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়। ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন সাধারণত তরল অক্সিজেন ব্যবহার কর।  যা মাইনাস 183 (-183) ডিগ্রি সেলসিয়াসে তরল হয় এবং তরল হাইড্রোজেন, যা মাইনাস 253 (-253) ডিগ্রি সেলসিয়াসে তরল হয়।

          এই সিস্টেমে তরল হাইড্রোজেন জ্বালানি হিসেবে কাজ করে থাকে যখন তরল অক্সিজেন অক্সিডাইজার হিসেবে কাজ করে এবং এই দুইয়ের মিশ্রণে তীব্র প্রদাহ তৈরি করা হয় যা একটি রকেট কে নির্দিষ্ট গতি প্রদান করে। এই সময় যখন ইঞ্জিনটি জ্বলতে থাকে তখন দুটি তরল কে বুস্টার পাম্পের সাহায্যে ক্রমাগত একটি জ্বলন্ত চেম্বারে দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। ইসরো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ,কঠিন বা স্বাভাবিক তরল জ্বালানি নির্ভর স্টেজ এর তুলনায় ক্রায়োজেনিক পর্যায়ে কার্যপদ্ধতি অত্যন্ত জটিল। কারণ এখানে জ্বালানি প্রচন্ড কম তাপমাত্রায় কৃত্রিমভাবে তরল আকারে স্টোর করা হয়। সেই কারণে তাপ কাঠামো সম্পর্কিত সমস্যা দেখা দেওয়াটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। ইসরোর এই  ক্রায়ো স্টেজ ইঞ্জিনের নাম সি 25 (C25), এবং এর জ্বালানি প্রায় 27 হাজার কেজি তরল মজুত থাকে যার মাধ্যমে 720 সেকেন্ড বা 12 মিনিট ধরে ইঞ্জিন কে জ্বলতে সহায়তা করে। প্রসঙ্গত এর আগে ‘চন্দ্রযান 2’ মিশন এর সময় ইসরো এই ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন ব্যবহার করেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *