15 অগাস্ট রবিবার, ভোরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে তালিবানেরা প্রবেশ করে।মার্কিন সেনা সরতেই মাত্র দেড় মাসে আফগানিস্তান দখল করে নিল তালিবানের।প্রেসিডেন্ট হাউসও এখন তাঁদের কবজায়।বর্তমানে আফগানিস্তানের পার্শ্ববর্তী দেশ তাজাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।দেশত্যাগের পর আশরফ ঘনি (Afghan President Ashraf Ghani) আফগান নাগরিকদের উদ্দেশে ফেসবুকে বার্তা দিলেন জানালেন, রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তালিবানদের (Taliban) তোপ দেগে ঘনি জানান, মানুষের মন জয় করতে অক্ষম তালিবান (Taliban)। তলোয়ার এবং বন্দুকের জোরে শাসন কায়েম করেছে তারা। ফেসবুক পোস্টে আশরফ ঘনি (Afghan President Ashraf Ghani) লেখেন, “আমি কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম রাষ্ট্রপতি ভবনের দখল নিতে আসা তালিবানদের (Taliban) মখোমুখি হব, নাকি গত দু’দশক ধরে যে দেশকে আমি রক্ষা করছি, সেই দেশ ছাড়ব। তালিবান (Taliban) কাবুল (Kabul) এবং কাবুলবাসীকে ধ্বংস করতেই এসেছে। সেজন্য রক্ষপাত এড়াতে আমি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”
তালিবান বাহিনীর দখলে চলে গিয়েছে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ। তালিবান শিবির সূত্রের খবর, কোনও অন্তর্বর্তী সরকার চায় না তারা। ক্ষমতার সম্পূর্ণ হস্তান্তর চায়।সম্ভবত আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তানের ক্ষমতা যেতে চলেছে তালিবানদের হাতে।শীঘ্রই আফগানিস্তান ইসলামিক আমিরশাহি ঘোষণা করা হবে।এবার থেকে দেশের নাম হবে ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তান। রাজ কায়েম করেই ঘোষণা তালিবানদের। মার্কিন সেনার হাতে পরাস্ত হওয়ার আগেই এই নামই ছিল দেশের। কাবুলের নতুন গভর্নর হলেন মোল্লা শিরিন। সে দেশে শরিয়ার কঠোর বিধি ফিরতে পারে বলে আশঙ্কিত নাগরিকরা, বিশেষ করে মহিলারা।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমানে কাবুল থেকে 129 জন ভারতীয়কে ফেরাল দিল্লি (Delhi)। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে নয়া দিল্লি। নাগরিকদের ফেরাচ্ছে আমেরিকা, জার্মানিও। অবিলম্বে রাজনৈতিক সমাধান জরুরি বার্তা দিয়েছে ন্যাটোর ।তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি নয়, জানাল ব্রিটেন-রাশিয়া।
কাবুলের মার্কিন দূতাবাস থেকে সেক্রেটারি অফ স্টেট এন্টনি জানিয়েছেন, সমস্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের আগামী দু’দিনের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।এই মুহূর্তে ব্রিটেনের অন্তত 3000 নাগরিক আফগানিস্তানের রয়েছেন। উদ্বিগ্ন ব্রিটেন প্রশাসন জানাচ্ছে, 600 সৈন্য পাঠিয়ে কাবুলের ব্রিটিশ দূতাবাস খালি করা হবে। কানাডার তরফে আফগানিস্তানে 2013 সালে 40 হাজার কানাডিয়ান সৈন্য পাঠানো হয়েছিল ন্যাটো বাহিনী হিসেবে। তাঁদের মধ্যে দেড়শো জনের বেশি সৈন্যের মৃত্যু হয়।স্পেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে দ্রুতগতিতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে আফগানিস্তানের দূতাবাস খালি করার জন্য। খুব শিগগিরই বিমান পাঠিয়ে বাসিন্দাদের দেশে ফেরানো হতে পারে।বার্লিন সূত্রে খবর, জার্মান নাগরিকদের পাশাপাশি তাদের দেশে সেই সমস্ত আফগানদের জায়গা দেওয়া যারা জার্মান প্রতিরক্ষা দপ্তরের সঙ্গে নিবিড় ভাবে এতদিন কাজ করেছেন।কাবুল বিমানবন্দরে কাছেই অস্থায়ী যোগাযোগ শিবির স্থাপন করেছে ফ্রান্স। নাগরিকদের পাশাপাশি ফরাসি সামরিক বাহিনীর জন্য যেসব আফগান নাগরিকরা কাজ করতেন তাদেরকেও ফ্রান্সের ঠাই দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ফ্রান্সের।ইতালি চাইছে যত দ্রুত সম্ভব নিজেদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে।
তালিবান শাসন কায়েম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো এক চরম বিশৃঙ্খলা এবং প্রাণহানির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এই ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতিতে নিজের প্রাণ হাতে নিয়ে যাতে মানুষ ফিরতে পারে এটাই চাইছে সমস্ত রাষ্ট্র।