ভারতীয় সংবিধান অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 5 নভেম্বরের মধ্যে একটি বিধানসভা আসন জিততে হবে। তাই সমস্ত রকম উদবেগ এর অবসান ঘটিয়ে নির্বাচন কমিশন আসন্ন উপনির্বাচন এর দিন এবং বকেয়া ভোটের দিন ঘোষণা করেন। শুধু তাই নয়, সবরকম করোনা বিধি মানা হয় তাই জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিশেষ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই কথা মাথায় রেখে করোনাকালে রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট ঘোষণা। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে, একাধিক নির্দেশ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। জোর দেওয়া হয়েছে, কোভিড বিধি মানার উপর। করোনাকালে রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে 30 সেপ্টেম্বর ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। বকেয়া ভোট হবে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর এই দুই কেন্দ্রেও। শুধু তাই নয় ওড়িশার পিপলিতেও ওই তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের মৃত্যুর পরে তিনটি আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল এবং পরে কোভিড এর দ্বিতীয় তরঙ্গের পরিপ্রেক্ষিতে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। চারটি আসনের ভোট গণনা অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে 6 থেকে 13 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করা হবে। তিনটি লোকসভা ও একটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন অবশ্য স্থগিত রাখা হয়েছে। বর্তমানে পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রি মমতা ব্যানার্জী, যিনি মে মাসে নন্দীগ্রাম থেকে পরাজিত হয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অব্যাহত থাকার জন্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য 5 নভেম্বর পর্যন্ত সময় আছে।
ইলেকশান কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিবরা এটা জানিয়েছিলেন যে তাদের রাজ্যে কোভিড এর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব বলেন, রাজ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত এবং বন্যার কারণে নির্বাচনী এলাকাগুলি প্রভাবিত হয়নি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “তিনি আরও জানিয়েছিলেন যে প্রশাসনিক বাধ্যবাধকতা এবং জনস্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে এবং রাজ্যে শূন্যতা এড়াতে, 159-ভবানীপুর, কলকাতার উপনির্বাচন, যেখান থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন করতে চান। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সাংবিধানিক প্রয়োজনীয়তা এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিশেষ অনুরোধ বিবেচনা করে, এটি 159-ভবানীপুর এসিতে উপনির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে একে সামনে পুজোর মরশুম, অন্যদিকে করোনা সংক্রমণের থার্ড ওয়েভ হাতছানি দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে একাধিক নির্দেশ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। তাতে বলা হয়েছে, প্রচার বা জনসভার ক্ষেত্রে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজেশন, থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মতো কোভিড বিধিগুলি মানতে হবে। মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা সেদিকে নজরদারি চালাবেন।
প্রসঙ্গত, বিগত নির্বাচনের এর সময় পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ কে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যে আট দফায় বিধানসভা ভোট হয়। সেইসময় প্রচার থেকে র্যালি, সব জায়গায়, সব রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে করোনা বিধি লঙ্ঘনের ছবি উঠে আসে। যার জেরে নির্বাচন কমিশনকে ভত্র্সনাও করে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু উপনির্বাচনের আগে এ নিয়ে সতর্ক কমিশন। তাতের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোভিড বিধি না মানলে, অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে ভবিষ্যতে আর র্যালি বা সভা করতে দেওয়া হবে না। কোনও তারকা প্রচারক করোনা বিধি না মানলে, তাঁকে আর ওই বিধানসভা বা জেলায় প্রচারের অনুমতি দেওয়া হবে না। নির্বাচনের কাজে যুক্তদের সবার দুটি করে ভ্যাকসিনের ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতি ভোট কেন্দ্রে ১ জন করে স্বাস্থ্যকর্মীকে কোভিড নোডাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ করতে হবে।