৫০০ দিনের বেশি হয়ে গেলো স্কুল কলেজ বন্ধ, চরম হতাশাজনক পরিস্থিতিতে শিশুদের ভবিষ্যৎ

दैनिक समाचार

লেখিকা সাবাতিনি চ্যাটার্জী

          প্রায় গত দেড় বছর ধরে শিশুদের শিক্ষা হতাশাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। যাদের পিতা-মাতারা একেবারেই দিনমজুর এবং ঝুঁকিপূর্ণ চাকরি করেন কোভিড 19 ভাইরাসের গ্রাসে যাদের চাকরি চলে গেছে তাদের সন্তানরা পড়াশুনো প্রায় বিসর্জন দিতে চলেছে। বাড়ির বাচ্চারা স্কুল ছেড়ে বাড়ির কাজে মগ্ন হয়েছে। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার জন্য পড়াশুনার প্রতি চরম অনীহা লক্ষ করা যাচ্ছে। ভারতের মতো দেশে যেখানে ৮১ % মানুষ অসংগঠিত কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত সেক্ষেত্রে তাদের বাচ্চাদের অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ডিজিটাল এডাপটেশন এর একটা বড় অভাবের জন্য কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের ক্ষেত্রে যারা মূলত মফস্বল থেকে এসে পড়াশোনা করে তাদের ক্ষেত্রে শহুরে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তাল মিলিয়ে পড়াশোনা করার জায়গাটা নিতান্তই কমে যাচ্ছে। এক শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা ক্রমাগত খেই হারিয়ে ফেলছে এবং তারা ধরতে পারছে না উচ্চ শিক্ষার আসল মান।দিনের পর দিন যদি এভাবেই চলতে থাকে হলে দেখা যাবে গোটা প্রজন্মের একটা অংশ  শিক্ষার থেকে সম্পূর্ণ হারিয়ে গেছে এবং আরেকটা অংশ খেই হারিয়ে  ফেলেছে যারা কিছুই ধরতে পারছেনা।

          বেশ কিছু রাজ্য স্কুল কলেজ খোলার দিকে এগোচ্ছে, কেউ পুরোপুরি বা কেউ অর্ধেক কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কোনরকম পরিকল্পনা জানা যায়নি। এইমতো আবস্থা চলতে থাকলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের যে ক্ষতি হয়ে যাবে তার থেকে ফিরে আসা এরপর অসম্ভব হয়ে যাবে। প্রশাসন চাইলে সব হতে পারে, কিন্তু চাইতে তো হবে। দীর্ঘ দিন ধরে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার জন্য দেশে  শিশু শ্রমিকের সংখ্যা এবং চাইল্ড ম্যারেজ এর পরিমান ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। প্রায় ৮০% সরকারি বিদ্যালয় গুলো  দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার জন্য শিশুরা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে শিশুরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে।

          এমত অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী,  মাননীয়া মমতা ব্যানার্জি মহাশয় বলেন, দুর্গা পূজার ছুটির পর পশ্চিমবঙ্গের স্কুল কলেজ পুনরায় চালু হতে পারে এবং বিকল্প দিনগুলিতে ক্লাস শুরু করা যেতে পারে।মাননীয়া আরো জানান যে কোভিড এর দ্বিতীয় বারের ঢেউ এর দরুন স্কুল এবং কলেজ গুলো কে বন্ধ করা হয়েছিল কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে খুব শীঘ্রই দুর্গ পুজোর পরে স্কুল এবং কলেজ গুলো খোলার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।

          শিক্ষা বিভাগের প্রবীণ কর্মকর্তা বলেন যে কোভিড এর তৃতীয় ঢেউয়ে আশঙ্কা থাকায় অদূর ভবিষ্যতেও সরকার বাহাদুরের স্কুল খোলার বিষয়ে কোন পরিকল্পনাই নেই। এই  বিষয়ে আরো মন্তব্য করেন যখনই স্কুল ক্যাম্পাস গুলো পুনরায় খোলা হবে তখন উচ্চতর শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা প্রথমে অফলাইনে ক্লাস শুরু করবে , প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের নয়। এপ্রিল-মে মাসে একটি বিধ্বংসী দ্বিতীয় তরঙ্গের পর, ভাইরোলজিস্ট ডাক্তার গগনদীপ কাং পরামর্শ দিয়েছিলেন যে শিক্ষক এবং কর্মীদের সম্পূর্ণ টিকা দিয়ে পর্যায়ক্রমে স্কুলগুলি পুনরায় চালু করা উচিত। এই প্রসঙ্গে আইসিএমআর এর প্রধান বলেছিলেন যে স্কুলগুলো পুনরায় খোলার জন্য এটি নিশ্চিত করতে হবে যে শিক্ষক এবং অন্যান্য সহকর্মীদের টিকা সম্পূর্ণ হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *